জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা সম্প্রতি ধারাবাহিক কলমবিরতি ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন। এর আগে ঈদুল আজহায় টানা ছুটির কারণে বন্দরে ৮-১০ হাজার অতিরিক্ত কনটেইনার জমে যায়। এরপর কর্মসূচির ফলে রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে আবারও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
শনি ও রোববার (২৮-২৯ জুন) রপ্তানি হয়নি ৭ হাজারের বেশি কনটেইনার, যা দেশের ইতিহাসে এক দিনে রপ্তানি না হওয়া কনটেইনারের সর্বোচ্চ পরিসংখ্যান। এতে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা।
বেসরকারি কনটেইনার ডিপো সমিতির (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার জানান, কাস্টমস কর্মকর্তারা না আসায় শুল্কায়ন হচ্ছে না, ফলে কোনো কনটেইনার ডিপো থেকে বন্দরে পাঠানো যাচ্ছে না। এর ফলে তিনটি বড় জাহাজ—এএস সিসিলিয়া, এক্সপ্রেস নিলওয়ালা ও হং ডা জিন-৬৮ রপ্তানি পণ্য না পেয়ে জেটিতে অলস দাঁড়িয়ে আছে।
মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির কর্মকর্তা আজমীর হোসেন চৌধুরী বলেন, কনটেইনার না পাওয়ায় সিসিলিয়া জাহাজ নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সিঙ্গাপুর যেতে পারেনি, যা পরবর্তীতে ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে।
বিজিএমইএ পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী জানান, কাস্টমস কর্মসূচির কারণে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে জুন মাসে ব্যাংক লোন পরিশোধের সময় হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, শুল্কায়ন না হওয়ায় নতুন করে কোনো কনটেইনার খালাস বা রপ্তানি করা যায়নি। কাস্টম হাউস এখন কার্যত বন্ধ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মুখপাত্র সাইদুল ইসলাম বলেন, এনবিআরের কর্মসূচিতে চট্টগ্রামের কর্মকর্তারাও সমর্থন দিয়েছেন, ফলে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানিতে বড় ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, যা দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।