মিরসরাইয়ে স্ত্রী-বড় বোনের পরিকল্পনা, ফয়েজ আহমেদ হত্যায় গ্রেফতার ৫

মাত্র ৩০ হাজার টাকার জন্য চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫) ও তার বড় বোন শ্যামলা বেগমের (৬০) পরিকল্পনায় স্বামী ফয়েজ আহমদকে (৮৫) হত্যা করা হয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনায় জড়িত তিনজন—আকতার (৩২), রুবেল (২৫) ও শাকিব (২৩)—কে গ্রেপ্তার করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।

শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগের দিন (১৮ জুলাই) দিবাগত রাতে সীতাকুণ্ড থেকে হত্যাকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নিহতের স্ত্রী ও স্ত্রীর বড়বোনসহ অভিযুক্ত পাঁচজনকে আদালতে পাঠানো হয়।

◼ ঘটনার পেছনের পরিকল্পনা

পুলিশ জানায়, নিহত ফয়েজ আহমদ ছিলেন কৃপণ স্বভাবের। স্ত্রী ফিরোজা নিয়মিত খরচ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন এবং ৩০ হাজার টাকা চুরির পরিকল্পনা করেন। এ পরিকল্পনায় যুক্ত হন স্ত্রীর বড় বোন শ্যামলা বেগম ও পরিচিত দিনমজুর আকতার।

#

পরিকল্পনা অনুযায়ী আকতার বারইয়ারহাট বাজার থেকে রশি কিনে ইয়াছিন, রুবেল ও শাকিবকে সঙ্গে নেয়। ২৫ জুন রাতে ফিরোজা ‘ধাত্রী কাজে’ যাওয়ার অজুহাতে বাইরে যান। ঘরের দরজা খোলা পেয়ে অভিযুক্তরা প্রবেশ করে ফয়েজ আহমদকে ঘুমন্ত অবস্থায় হাত-পা বেঁধে ফেলে। তিনি জেগে উঠলে মুখে কাপড় গুঁজে ও নাক-মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

◼ টাকা ভাগ-বাটোয়ারা ও পালিয়ে যাওয়া

হত্যার পর ঘরের ড্রয়ার থেকে ৩০ হাজার টাকা চুরি করে অভিযুক্তরা। আকতার নেয় ১৪ হাজার টাকা, আর বাকি ১৬ হাজার টাকা ভাগ করে নেয় রুবেল ও শাকিব।

◼ লাশ উদ্ধার ও মামলা

২৬ জুন সকালে ফিরোজা বেগম বাড়ি ফিরে স্বামীকে মৃত অবস্থায় পান এবং বুঝতে পারেন আকতার টাকা নিয়ে পালিয়েছে। পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ওইদিন নিহতের ছেলে আলমগীর বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জোরারগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হালিম জানান, “মোট পাঁচজন এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত। গ্রেপ্তার তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।”

এ সম্পর্কিত আরও খবর