ওজন কমানো কিংবা ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরানো—এই দুই চাহিদাই আজকের জীবনে খুব সাধারণ। কেউ ভাবেন নিজের বাড়তি ওজন নিয়ে, কেউ বা ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব ও ব্রণের দাগ নিয়ে চিন্তিত থাকেন। অথচ এই দুই সমস্যারই সমাধান লুকিয়ে আছে আপনার রান্নাঘরের একটি সাধারণ মশলায়। সেই মশলাই হচ্ছে জয়ত্রী।
পুষ্টিবিদ সুমন পাহুজা জানিয়েছেন এই বিশেষ মশলার চায়ের গুণের কথা। গুরুগ্রামের বাসিন্দা এই পুষ্টিবিদ নিজেও এক সময় স্থূলতার সমস্যায় ভুগেছেন। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় জয়ত্রী তাঁর জীবনে বদল এনেছে বলেই দাবি তাঁর।
জয়ত্রীতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা শরীরের ফ্রি র্যাডিক্যালস দূর করে। এর ফলে ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। এছাড়া এতে আছে প্রদাহনাশক উপাদান, যা ত্বকের ব্রণ, লালচে ভাব ও দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
জয়ত্রী রক্ত সঞ্চালন ভালো রাখতে সহায়ক, ফলে ত্বকে দ্রুত পুষ্টি পৌঁছে যায় এবং ত্বকের কোষে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে আসে। এ ছাড়াও জয়ত্রী একটি প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। বর্ষাকালে যখন ব্যাক্টেরিয়া ও জীবাণুর প্রকোপ বাড়ে, তখন জয়ত্রী ত্বককে রাখে সুরক্ষিত।
একটি গবেষণাপত্রে ভারতীয় দুই গবেষক জে রেমা ও বি কৃষ্ণমূর্তি জানান, জয়ত্রীর এসেন্সিয়াল অয়েল ত্বকের রং কয়েক স্তর পর্যন্ত উজ্জ্বল করতে পারে এবং ত্বকের নানা সমস্যাও সারাতে সক্ষম।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও জয়ত্রী সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট উপাদান বিপাকের হার বাড়িয়ে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।
এই চা তৈরি করা খুব সহজ। মাত্র ১/৪ চা চামচ জয়ত্রী গুঁড়ো নিয়ে তা আধ কাপ (১২০ মিলি) উষ্ণ জলে ভালোভাবে গুলে নিতে হবে। তারপর রাতে ঘুমানোর আগে এটি পান করতে হবে। নিয়মিত ২০ দিন পান করলেই চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ সুমন পাহুজা।
তবে অতিরিক্ত মাত্রায় জয়ত্রী খাওয়া ঠিক নয়। যাদের লিভার বা কিডনির সমস্যা আছে কিংবা গর্ভবতী, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে জয়ত্রী হতে পারে একটি সহজ ও কার্যকর উপায়। রান্নাঘরে থাকা এই সাধারণ মশলাই আপনার রূপচর্চার গোপন সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে প্রতিদিন।