“বিভ্রান্তি থাকলেও দলীয় ঐক্য ভাঙবে না”—চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এমদাদুল খন্দকার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করেছে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি। এই সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় পর্যায়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বহিষ্কৃতরা দীর্ঘদিন ধরে মিরসরাই রাজনীতির পরিচিত মুখ ছিলেন। এ অবস্থায় স্থানীয় রাজনীতি ও দলীয় কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হয় মিরসরাইয়ের বিএনপি নেতা এমদাদুল খন্দকারের সঙ্গে। দলীয় অবস্থান, শৃঙ্খলা, বহিষ্কারের প্রভাব এবং কর্মীদের মানসিকতা নিয়ে তিনি তাঁর মতামত জানান মিরসরাই ট্রিবিউন-কে।

প্রতিবেদক: সদ্য বহিষ্কৃত পাঁচ নেতার বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

এমদাদ খন্দকার: দলীয় সিদ্ধান্ত সবসময়ই আমাদের সম্মান করতে হয়। যাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছে, তাঁরা মিরসরাইয়ের রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। সিদ্ধান্তটি কেন্দ্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে, আমরা আশা করি এটি যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ ও পর্যালোচনার ভিত্তিতেই হয়েছে।

প্রতিবেদক: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে—আপনি কি মনে করেন সেটি ন্যায়সঙ্গত?

#

এমদাদ খন্দকার: শৃঙ্খলা রক্ষায় দল যে পদক্ষেপ নেয়, সেটি দলীয় নীতির অংশ। তবে প্রতিটি অভিযোগের নেপথ্যে বাস্তবতা থাকে। আমি মনে করি, সবার বক্তব্য শোনা এবং পরিস্থিতি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করাই দলীয় শৃঙ্খলার সত্যিকার রূপ প্রতিফলিত করে।

প্রতিবেদক: বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি স্থানীয়ভাবে আগে আলোচনা করা হয়েছিল কিনা?

এমদাদ খন্দকার: আমার জানা মতে, সিদ্ধান্তটি সরাসরি কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে এসেছে। স্থানীয়ভাবে এমন কোনো আলোচনার আয়োজন হয়নি। তবে দলের ভেতরের বিষয়ে সবসময়ই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিশেষ বিবেচনা থাকে, সেটিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

প্রতিবেদক: আপনি কি মনে করেন এতে করে মিরসরাইয়ে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে?

এমদাদ খন্দকার: প্রত্যেক সিদ্ধান্তই কোনো না কোনো প্রভাব ফেলে। এখন মূল চ্যালেঞ্জ হবে—কর্মীদের মনোবল ঠিক রাখা এবং ঐক্য অক্ষুণ্ণ রাখা। আমরা আশা করি, দলীয় নেতৃত্ব পরবর্তী কার্যক্রমে এই বিষয়গুলো যথাযথভাবে বিবেচনা করবে।

প্রতিবেদক: দলে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে?

এমদাদ খন্দকার: শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত যোগাযোগ, সমন্বয় এবং মতবিনিময় অত্যন্ত জরুরি। মিরসরাইয়ের কাউকে কোন চাঁদাবাজি কিংবা কোন অপরাধ করদে দেয়া যাবে না। ভবিষ্যতে আমরা চাই, যেকোনো পরিস্থিতি উত্তরণের ক্ষেত্রে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ পরামর্শ এবং গঠনমূলক যোগাযোগ বজায় থাকুক।

প্রতিবেদক: সাধারণ কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব কেমন পড়তে পারে বলে আপনি মনে করছেন?

এমদাদ খন্দকার: প্রাথমিকভাবে কিছুটা বিভ্রান্তি বা প্রশ্ন থাকতেই পারে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, সবাই দলের বৃহত্তর স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ধৈর্য ধরবেন। দলের স্বার্থই আমাদের সবার কাছে মুখ্য হওয়া উচিত।

প্রতিবেদক: বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আপনার কী বার্তা থাকবে এ নিয়ে?

এমদাদ খন্দকার: আমরা তৃণমূল নেতারা সবসময় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় থাকি। আমাদের অনুরোধ থাকবে, স্থানীয় বাস্তবতা এবং সাংগঠনিক বাস্তবচিত্র বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতের সিদ্ধান্তগুলো আরও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন হোক—এটাই সকলের প্রত্যাশা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর